প্রচন্ড গরম এবং গত কয়মাস ধরে তীব্র লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ঝিনাইগাতীবাসীর জনজীবন। প্রচন্ড তাপদাহে গত কয়েকদিন ধরে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ডে ঝিনাইগাতী গারো-পাহাড়ের মানুষের দৈনন্দিন কর্মকান্ড মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তেমনি তাপদাহের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ। আর মশার যন্ত্রণার দিশেহারা হয়ে পড়েছে ঝিনাইগাতী সর্বশ্রেণির মানুষ। সর্দি জ্বর, অ্যালার্জি এবং বিভিন্ন চর্মরোগসহ দেখা দিচ্ছে পেটের পীড়া এবং প্রচন্ড ডায়রিয়া। ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রচন্ড গরমে প্রতিদিন বাড়ছে ডায়রিয়া রোগী। রোগীদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। এদিকে হঠাৎ এ গরমে রোগ বৃদ্ধির কারণে সুযোগের সদ্ব্যবহার করছে উপজেলার গ্রামাঞ্চলের অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ী। মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তীব্র লোডশেডিংও।
প্রতিনিয়ত বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার খেলা চলছে তো চলছেই। স্থবির হয়ে পড়েছে ঝিনাইগাতীর ব্যবসা-বাণিজ্যের অগ্রগতিসহ সরকারি অফিস আদালতের যাবতীয় কার্যক্রম। দিনে অন্তত পাঁচ-সাতবার এবং সন্ধা ৭টা নাগাদ শুরু হওয়া লোডশেডিংয়ের সময় বিদঘুটে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় গোটা উপজেলা সদর। সাথে সাথে শুরু হয় প্রচন্ড গরম ও তীব্র মশার যন্ত্রণা। এতে নাকাল উপজেলাবাসী। বিদ্যুতের অভাবে উপজেলাবাসী বিভিন্ন বাসাবাড়িতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফ্রিজে রাখা মাছ-তরকারিসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী এবং অকেজো হয়ে যাচ্ছে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি। এদিকে বিদ্যুতের এ অবস্থা জানতে ঝিনাইগাতী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের কাউকেই পাওয়া যায়নি।
সরেজমিন ঘুুরে দেখা যায়, বৈধ গ্রাহকদের আড়ালেও রয়েছে অনেক অবৈধ্য গ্রাহক বলে জানা যায়। যাদের কাছ থেকে ওই অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী কোনো প্রকার রসিদ ছাড়াই চুক্তিভিত্তিক মোটা অঙ্কের মাসোহারা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও জানা গেছে।
এ ছাড়া রয়েছে ব্যাটারিচালিত অসংখ্য ত্রি-চক্র যান। যে কারণে তীব্রতর হয়ে ওঠেছে উপজেলাবাসীর বিদ্যুৎ সঙ্কট। জানা যায়, বিদ্যুত বিভাগের এক শ্রেণির দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগশাজসে উপজেলা সদরের জেনারেটর ব্যাবসায়ীদের সাথে আতাত করে অনেক সময় ইচ্ছে করেই রাতের বেলায় লোডশেডিং ঘটাচ্ছে এবং জেনারেটর ব্যবসায়ীরা জেনারেটর চালু করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে প্রচন্ড গরমে তীব্র মশার যন্ত্রণার লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অথচ সরকারিভাবে দেয়া হচ্ছে না কোনো মশার ওষুধ। ঝিনাইগাতীর যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ও ছোট-বড় পুকুর থেকে বেড়েই চলছে এ মশার উৎপত্তি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন