জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার রঘুনাথপুর-শ্যামপুর কাঁচা রাস্তার পাকা করনে কাজ ধীর গতিতে শুরু হলেও বর্তমান ইট, বালু, বিটুমিনসহ সকল জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় সড়কের কাজ বন্ধ রেখে পালিয়েছে ঠিকাদার, এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। ওই সড়কের গর্তে বৃষ্টির পানি জমে চলাচল করতে গিয়ে কাঁদাযুক্ত সড়কে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এ উপজেলার প্রায় ১০ গ্রামের জনগণকে ওই সড়কে চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) অফিস সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলার নাজিরপুর ক্ষেতগাড়ী থেকে কালিতলা বাজার পর্যন্ত ৬৫০ মিটার এবং রঘুনাথপুর থেকে সুলতানপুর পর্যন্ত ৩৫০ মিটারসহ মোট এক কিলোমিটার কাঁচা সড়ক পাকাকরণের জন্য সে সময় দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র অনুযায়ী বগুড়ার মেসার্স মুঞ্জুরুল আলম মোহন নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওই সড়ক পাকাকরণ কাজের দায়িত্ব পায়। স্থানীয় প্রকৌশলী অফিস হইতে কাজের অনুমতি নিয়ে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চলতি বছরের মার্চ মাসে উপজেলার রঘুনাথপুর-শ্যামপুর কাঁচা সড়কে পাকাকরণের জন্য মাটি খননের কাজ শুরু করে। সে অনুযায়ী তারা সড়কে বালু দিয়ে প্রায় ছয় মাস ফেলে রাখে। আজ পর্যন্ত সড়কের কোথাও খোয়া ফেলা হয়নি। ইট, বালু, বিটুমিনসহ সকল জিনিসপত্রের মূল্যে বৃদ্ধি হওয়ায় ঠিকাদারের লোকজন তাদের আসবাবপত্র নিয়ে কাজ ছেড়ে তারা পালিয়েছে। গত দু’মাস ধরে ওই সড়কের কাজ বন্ধ আছে। এর আগে তাদের সড়কে কাজ করতে দেখা গেলেও এখন আর দেখা যায় না। বর্তমানে সড়কে কাজ বন্ধ রাখায় বৃষ্টির পানি জমে পুরো সড়ক কাঁদা ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওই এলাকার মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাস্তার এই দুর্ভোগের কারণে এলাকার কৃষক তাদের কষ্টের উৎপাদিত কৃষিপণ্য সময়মতো বাজারজাত করতে না পারায় নায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত ওই সড়ক পাকাকরণ অথবা বালু দিয়ে ভরাট করতে হবে। তা না হলে উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ঘেরাও করা হবে।
উপজেলার সহলাপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী খন্দকার আনোয়ার হোসেন বলেন, এতদিন থেমে থেমে সড়কের নির্মাণ কাজ করায় বিভিন্ন প্রকার যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তবুও কিছু মনে হয়নি। এখন যে সড়কের কাজ পুরোটাই বন্ধ আছে। তা ছাড়া পানি জমে সড়কটি কাঁদায় পরিণত হয়েছে। যানবাহন নিয়ে দূরের কথা, হেঁটেই চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আকলাস শিবপুর-শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক একরামুল হক উজ্জল বলেন, গত মার্চ মাসে এ সড়কের কাজ শুরু হয়েছে। মাটি খনন ছাড়া আজও পর্যন্ত কোনো কাজই হয়নি। পাকা করণের কাজ ছেড়ে ঠিকাদার পালিয়েছে। তাদের গাফিলতির কারণেই বন্ধ হয়েছে এ সড়কের কাজ। এর জন্য ঠিকাদারই দায়ী।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মুঞ্জুরুল আলম মোহনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়ায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ জানান, রঘুনাথপুর-শ্যামপুর রাস্তা পাকাকরণের জন্য ইতোমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে তিনটি পৃথক নোটিস দেয়া হয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদার ইতোমধ্যে মৌখিক প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। তা আজও বাস্তবায়ন না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন