আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে নেত্রকোনার পাঁচটি আসনে বইছে ভোটের হাওয়া। গত ১০ ডিসেম্বর প্রতীক পেয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ভোটারদের ঘরে ঘরে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন এমপি প্রার্থীরা। নেত্রকোনা জেলার পাঁচটি আসনে আ.লীগ-বিএনপিসহ মোট ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, সাধারণ ভোটাররা নানাবিধ সন্দেহের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন আদৌ হবে কি-না? ভোটের দিন পরিস্থিতি কেমন হবে? ভোটাররা নিরাপদে নিশ্চিন্তে নিবিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবে কি-না? শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে কি-না? তা নিয়ে জনমনে দ্বিধা-দ›দ্ব-সংশয় থাকলেও বেশির ভাগ জনগণের প্রত্যাশা একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে তারা যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাদের পছন্দসই প্রার্থীকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, নির্বাচন কমিশন সেই ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন।
প্রতীক বরাদ্দের পর ক্ষমতাসীন আ.লীগ প্রার্থীরা ফুরফুরে মেজাজে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারলেও বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা দায়ের ও গ্রেফতার অব্যাহত থাকায় তারা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় তেমনভাবে মাঠে নামতে পারছে না। গত কয়েক দিন ধরে জেলার প্রভাবশালী ও সক্রিয় নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় পুলিশিহ ানা এবং বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসন সকল প্রার্থীরা জন্য এখন পর্যন্ত সমতল মাঠ তৈরি করতে না পারায় এবং প্রশাসনে কোন রদবদল না হওয়ায় এ নিয়ে বিএনপির প্রার্থীরা চিন্তিত। এসব কারণে দলীয় নেতাকর্মীদের মনে সন্দেহ ক্রমেই ঘনীভ‚ত হচ্ছে। সব মিলিয়ে নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পথ চলতে চলতে কথা হয় আবু আব্বাছ ডিগ্রি কলেজের ছাত্র আসিফুর রহমান অসিফের সাথে। সে এবার নতুন ভোটার হয়েছে। তার নির্বাচনী ভাবনা হচ্ছে, আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো। নিরাপদে ভোট দিয়ে সুস্থ শরীরে বাড়ি ফিরে যাব, এটাই আমার প্রত্যাশা। সাকুয়া বাজারের ব্যবসায়ী হিমাংশু কুমার দেবনাথ বলেন, আমি গত ১০ বছর ধরে ভোট দিতে পারিনি, এবার ভোট দিতে পারব কি-না তা নিয়ে সন্দেহে আছি।
দুর্গাপুর পৌর বিএনপির সদস্য সেকুল জানান, আমার বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা রয়েছে। দুই মাস জেল খেটেছি, এখনো শান্তিতে বাসায় ঘুমাতে পারছি না। নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামতে পারব কি-না তা নিয়ে দ্বিধাদ্ব›েদ্ব রয়েছি। মোহনগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল ইসলাম খোকন জানান, শেখ হাসিনার সরকার যে উন্নয়ন করেছে, সেই সব উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছি। পূর্বধলা উপজেলা বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ নওয়াব বলেন, সাধারণ ভোটাররা যদি নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে, আর নিরাপদে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, তা হলে বিএনপির প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হবে। কেন্দুয়া রামপুর এলাকার সোহরাব হোসেন মাস্টার বলেন, এলাকায় এখনো নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। আমি চাই সুষ্ঠু পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাভোটি অনুষ্ঠিত হোক। জনগণ যাদের ভোট দেবে তারাই নির্বাচিত হয়ে এলাকার উন্নয়নে অবদান রাখুক। বারহাট্টার শেখের পাড়ার জিয়াউর রহমান খোকন বলেন, যে প্রার্থী এলাকার উন্নয়ন করতে পারবে সেই প্রার্থীকেই ভোট দেবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন