চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে জোড়ালো নির্বাচনী প্রচারণা শেষ পর্যায়ে। মহাজোটের আ.লীগ দলীয় প্রার্থী বর্তমান এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর সঙ্গে বিএনপি তথা অন্যকোন হেভিওয়েট প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থী না থাকায় উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারনা থাকলেও সংঘর্ষ-উত্তেজনা, মারপিট কিছুই ছিলনা। তবে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ও তার দলের নেতাকর্মিরা বিরামহীন প্রচারণা চালিয়েছেন এলাকায়। গণসংযোগ, জনসভায় যোগ দিয়ে নির্বাচনী এলাকা সরব রাখার চেষ্ঠা করছেন ফজলে করিম ছেলে ফারাজ করিমও। বিএনপির প্রার্থী জসিম উদ্দিন সিকদার প্রচারণা শুরুর দ্বিতীয় দিন থেকে গণসংযোগ করলেও তা দিনে কয়েকঘন্টা করে সীমিত আকারে। ফলে অতীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন গুলোতে বিএনপি যে ভাবে প্রচার প্রচারণা, গণসংযোগ করেছিল একাদশ সংসদ নির্বাচনে তা-ছিলনা। চট্টগ্রামসহ সারাদেশের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় পোস্টার পরস্পর প্রার্থীর পোস্টার ছেঁড়াছেঁড়ির অভিযোগ, হানাহানি, মারামারি, সহিংসতার খবর মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার হলেও এবার রাউজানে সে ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি আ.লীগের প্রার্থী ফজলে করিম চৌধুরীর সঙ্গে অনেকটা সহবস্থানে থেকে নির্বাচনী গণসংযোগ করছেন বিএনপির প্রার্থী জসিম উদ্দিন সিকদার। রাউজানে নৌকা ও ধানের দু’জন একটি মেজবান অনুষ্ঠানে কোলাকুলি, কুশল বিনিময় করেছেন, যা সর্বত্রে প্রশংসিত হয়েছেন দুজনই। তার আগে ফজলে করিম পুত্র ফারাজ করিম চৌধুরীর সঙ্গে জসিম উদ্দিন সিকদার খুব আন্তরিকতার সঙ্গে কুশল বিনিময়, আলাপ-আলোচনা করেন সদরস্ত মুন্সিরঘাটায়। তখন ধানের শীষের প্রার্থী জসিমের কাছে নৌকা মার্কায় পিতার পক্ষে ভোট চান ফারাজ করিম।
এদিকে আ.লীগের প্রার্থী এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী নির্বাচনী প্রচারণার শুরুর দিন ১১ ডিসেম্বর থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৪ টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় প্রতিটি ওয়ার্ড,গ্রাম,মহল্লা,বাজার সর্বত্রে বিরামহীন প্রচারনা চালিয়েছেন। তার পক্ষে প্রতিদিন স্ব স্ব ইউনিয়নে বিরামহীন প্রচারনা করেছেন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আ.লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আ.লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মি ও সাধারণ ভোটারগণ। প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌর সভায় নির্বাচনী ক্যাম্প করে চালানো হয়েছে প্রতিদিন প্রচারনা। অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী জসিম উদ্দিন সিকদার অনেকটা নীরবে তার নির্বাচনী প্রচারনা চালিয়েছেন প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায়। নেতাকর্মির বড় কোন বহর নিয়ে গণসংযোগ কিংবা পথসভা করেননি জসিম। ব্যাক্তিগত একটি গাড়ি করে ছেলে ও কয়েকজন গোলাম আকবর খোন্দকার অনুস্বারীদের নিয়ে গণসংযোগ করেছেন তিনি। তার সমর্থকদের সঙ্গে প্রতিপক্ষ দলের প্রার্থীর সঙ্গে বাক-বিতন্ডা, মারপিট, হৈ চৈ হওয়ার মত কোন ঘটনাও ঘটেনি গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। তবে জসিম উদ্দিন সিকদার অভিযোগ করে বলেন ভোটের দিন আমার দলের বিভিন্ন নেতা কর্মিরা আতংকে আছেন নির্বাচনী কাজ করতে পারবে কিনা এ ভয়ে। ধানের শীষের প্রাথী বলেন সেনা,বর্ডার গার্ড,প্রশাসন নজরদারী বাড়ালে প্রতিটি এলাকায় আমার নেতা কর্মিরা কাজ করতে পারবে নির্ভয়ে। এদিকে রাউজানে বিএনপি-আ.লীগের পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আবদুল আলী (হাতপাখা) থাকলেও, তাকে একদিনও এলাকায় প্রচারনায় দেখা যায়নি। সে হাটহাজারী এলাকার রৌহল্লাপুর এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেলেও সে প্রচারনায় আসেনি একদিনের জন্য। তার সংগঠনটির অস্তিত্ত খুজে পাওয়া যায়নি রাউজানের কোথাও।
একাদশ নির্বাচনী ময়দান সম্পর্কে উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ন সম্পাদক বশির উদ্দিন খান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন ‘রাউজানে নির্বাচনী পরিবেশ উৎসবমুখর রয়েছে। একটি নির্বাচনে যা প্রচারণা যেমন- উঠান বৈঠক, পথসভা, জনসভা, পোস্টার সাঁটাইসহ সব ধরণের প্রচার করা হয়েছে। মানুষের কাছে ভোট চাইতে এলাকায় এলাকায় গিয়েছেন আমাদের প্রার্থী ৩ বারের এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। বিএনপি প্রার্থী জসিম উদ্দিন সিকদার বলেন, আমি নির্বাচনী গণসংযোগ করেছি প্রতিটি ইউনিয় ও পৌর এলাকা। বিএনপির অনেক নেতা মামলার কারনে জসিমের সাথে প্রচারনায় যোগ দিতে পারেননি। তবে জেলা পর্যায়ের অনেক বিএনপি নেতা নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন