মোঃ ওমর ফারুক, ফেনী থেকে : বর্ষার পূর্বেই ফেনী সড়ক বিভাগ নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন সড়কের চিত্র ছিল বেহাল ও জরাজীর্ণ। খানা-খন্দে পরিপূর্ণ সড়কে বছরজুড়ে জোড়াতালি দিয়েছে ফেনী সড়ক বিভাগ। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে জনমনে ক্ষোভ আর নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে বছরজুড়ে ফেনী সড়ক বিভাগের জোড়াতালিতে সড়কগুলোর অবস্থা আরো নাজুক হচ্ছে। সরেজমিন পরিদর্শন, ভুক্তভোগী এবং এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ফেনী শহরের মূল সড়কগুলো ২/৩ বছর হলো কোন সংস্কার নেই। ফলে শহর এবং বিভিন্ন উপজেলার সড়কগুলো খানা-খন্দে পরিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ফেনী শহরের এসএসকে সড়ক,একাডেমী রোড,ট্রাংক রোড,মিজান রোড,পাগলা মিয়া সড়ক,বিসিক সড়কসহ উপজেলা সড়কগুলোর বেহাল চিত্র দেখা গেছে। জরাজীর্ণ সড়কের পিচ উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বর্ষার পূর্বে এসব রাস্তা কিছুটা ভালো থাকলেও বর্তমানে তা কাদা পানিতে একাকার হয়ে আছে। বর্ষার পানিতে শহরের এসব রাস্তার বিভিন্ন অংশ পানির নিচে তলিয়ে যায়। পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এবং ড্রেনগুলো অবৈধ দখলদারদের কবলে যাওয়ায় পানি জমে সড়ক নষ্ট হচ্ছে। এক পশলা বৃষ্টিতে শহরের এসএসকে সড়কে কোমর সমান পানি জমা হয়। এছাড়া ট্রাংক রোডের খেজুর চত্বর থেকে লালপোল এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মহাসড়কের স্টারলাইন পাম্প পর্যন্ত সড়কে বর্ষা মৌসুমে বড় বড় গর্তগুলোতে পানি জমে প্রায় নদীতে পরিণত হয়েছে। এদিকে শহরের সবচে‘ বেহাল অবস্থা জেলা সদর হাসপাতালে যাতায়াতকারী একাডেমী রোডের। এ সড়কের রেলক্রসিং এলাকা থেকে হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত জায়গা যেন ভাসমান নদী। সওজের লোকেরা ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে করে মাঝেমধ্যে ইট আর বালি ফেলে চালক ও যাত্রীদের শান্তনা দিতে চাইলেও তাতে হিতে বিপরীত হয়। ইট ভেঙ্গে আর বালি কাদা হয়ে কাদা পানি একাকার হয়ে যায়। বেহাল একাডেমী সড়কে চলতে গিয়ে দুর্ঘটনা নিত্যদিনের সঙ্গী। এই সড়কটি দিয়ে ফেনী জেলার পরশুরাম,ফুলগাজী,ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। তাছাড়া এটি ফেনী সদর হাসপাতালের প্রধান সংযোগ সড়ক হওয়ায় জেলাবাসীর পাশাপাশি চিকিৎসা নিতে আসা অন্য জেলার লোকেরা সড়কের বেহাল দশার কারণে দুর্ভোগের শিকার হয়। শহরের বাণিজ্যিক এলাকা ফেনী বিসিক শিল্পনগরীর প্রধান সড়কের জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে চালকরা গাড়ি নিয়ে ঐ সড়কে ঢুকতে ভয় পায়। এ সড়ক বিশ্বরোড কানেকটিং হওয়ায় দুরাপাল্লার বিভিন্ন যান চলাচল করে। মালবাহী গাড়িগুলো মহাসড়কের যানজট এড়াতে বিসিক সড়ক দিয়ে যায়। বর্তমানে নিরুপায় হয়ে চালকরা সড়কটি ব্যবহার করছে। শহরের কোর্ট বিল্ডিং সংলগ্ন পাাগলা মিয়া সড়ক সংস্কারের এক বছরও পূর্ণ হয়নি। এর মধ্যে সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠা শুরু হয়েছে। জেলার ফেনী-ফুলগাজী-পরশুরাম-বিলোনিয়া, ফেনী-ছাগলনাইয়া, ফেনী-সোনাগাজী, ফেনী-দাগনভূঞা-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে খানা-খন্দে ভরে গেছে। সড়কের এমন চিত্র তুলে ধরে ফেনী সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ করিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনদুর্ভোগ দুর করতে সওজ ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে প্রাথমিকভাবে ইটের সলিং দিচ্ছে। বর্ষা মৌসুম শেষ হলে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সংস্কার করা হবে। পরবর্তীতে বড় প্রকল্পের অংশ হিসেবে ফেনীর পাঁচটি সড়ক নতুনভাবে সংস্কার করা হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন